PROPOSE.......!

SaiF UddiN



রাইসাকে প্রফোজ করার নতুন নতুন উপায় ভাবতে ভাবতে কত যে রাত যে নির্ঘুমে কেটেছে তার হিসাব নেই।এই নিয়ে পঞ্চাশ বারের উপর প্রফোজ করলাম।কিন্তু প্রতিবারি না বা হাসার শব্দটি রাইসার মুখ থেকে শুনতে হয়েছে।সে কোনটাতেই রাজি না।যে দিন নাকি তার মনের মত প্রফোজ
করতে পারব সে দিন মেনে নিবে।আর আমি
সেদিনের অপেক্ষার জন্য নানা ভাবে নানা স্টাইলে, প্রফোজ করে আসছি কিন্তু ফলাফল শূন্য শূন্যতেই রয়ে গেল।কোন ফুল বাকি রাখি নাই।
.
এবার নতুন এক বুদ্ধি বের করলাম আর সাথে
সাথেই রাইসাকে কল দিলাম
.
-হ্যালো।
-হুম বল।
-ওফ রিয়া কে কল করতে গিয়ে তোমাকে কল করে দিলাম।
-ঔ কুত্তা রিয়া টা কে।
-যে হবে হোক তোমাকে বলতে যাব কেন।রিয়া মনে হয় রাগ করবে আচ্ছা এখন রাখি।তোমার সাথে পরে কথা বলি।
-তুমি যদি কল কেটে দাও।তোমার একদিন কি আমার একদিন।
-হু কি করবা।
-মুখ সেলাই করে দিব যাতে রিয়ার নাম আর মুখে নিতে না পার।
-মুখ বন্ধ করলে কি হবে আমার মন ত বন্ধ করতে পারবে না।মন ঠীকি রিয়াকে ডেকে যাবে।আর রিয়া...
-ঔ রিয়া টা কে বল তাড়াতাড়ি (রেগে গিয়ে)
-তোমাকে কেন বলব।
-বলতে ত তোকে হবেই।
-তোমাকে বলতে আমার বয়েই গেছে।
-তুই বলবি না।
-না।
-দাড়া আমি আসতেছি আন্টিকে এসেই সব বলব।তুই খারাপ মেয়েদের সাথে চলাফেরা করিস।আর প্রেম ও করিস তাই না। ব্লা ব্লা ব্লা।
.
(খাইছে আমারে কি করতে গিয়ে কি হয়ে গেল।
এখন নিজের কপালে নিজেই কুড়াল মারতে
ইচ্ছা করতাছে।আর রেগে তুই বলা শুরু করে দিছে)
.
-আরে না না আমি বলছি।তবে এখন না আজ বিকালে ছাদে আসিও তখন বলব।
.
ঔ পাশ থেকে কোন শব্দই পেলাম না।মনে হয় লাইনটা কেটে গেল।একটু বেশিই করে ফেললাম।আজ মনে হয় কপালে খারাপ কিছু আছে।
.
আর হ্যা রাইসাদের পরিবার প্রায়ই পাচঁ বছর আগেই আমাদের ফ্লাটে বাসা বাড়া নিয়েছিল।আর এখনো আছে।সেই সুবাধে রাইসার পরিবারের সাথে আমাদের খুব ভাল সম্পর্ক যেন আত্নীয়ের মত।
রাইসা এবার ভার্সিটিতে চান্স পেয়েছে।আর আমি নীল।বাবার একমাত্র ছেলে।পড়ালেখা শেষ করে বাবার ব্যবসা দেখাশুনা করছি।রাইসার ভার্সিটি অফিসের কাছেই হওয়ায়।প্রতিদিন তাকে ভার্সিটি পৌছে দিতে হয়।প্রথম প্রথম এটি বিরক্ত লাগলে ও এখন খুব ভাল লাগে।
.
কিন্তু এর আগে এত বছর থাকার পরে ও রাইসার সাথে তেমন কথা হত না।মাঝে মাঝে দেখা হলে কেমন আছি কেমন চলছে এসব আর বেশি কিছু না।কিন্তু যখন রাইসা ভার্সিটি চান্স ফেল।তখন যেন সবকিছু বদলে গেল।ওর সাথে ভালই একটা বন্ধুত্ব হয়ে গেল।একসাথে গাড়িতে করে যাওয়া।মাঝে মাঝে রিক্সায় করে যাওয়া।আবার অবসর সময়ে ওর সাথে ঘুরতেই যাওয়া।এসব কিছু আমি খুব অনজয় করতাম।কেমন জানি ওর সাথে কথা বলতেই বা একসাথে যেতেই অনেক ভাল লাগত।
.
কখন যে নিজের অজান্তে রাইসাকে ভালবেসে ফেলি নিজেই বুঝতে পারলাম না।সব কিছু জুড়ে যেন রাইসা আর রাইসা।অফিসে গেলে কাজে তেমন একটা মন বসত না।আর এটা আর মনে পোষে রাখতে পারলাম না।একদিন রাইসাকে পার্কে ঘুরতে যাবার জন্য বলেছিলাম ও রাজি ও হয়ে যায়।
আর আমি সেই সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করলাম।কারণ কাউকে মনের কথাটা জানাতে মনোরম পরিবেশ দরকার।পার্কে যাবার পর আমি পুরাই নার্বাস হয়ে যায়। কীভাবে প্রফোজ করব সেই চিন্তা করতে করতে হাটার সময় হঠাৎ করে রাইসাকে কোন কিছুই ছাড়া প্রফোজ করে বসলাম।
এরপর রাইসা অনেক্ষন ধরে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল।
.
আমিত পুরাই ঘাবড়ে গেলাম।কি না কি উওর দে।
আমার অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে রাইসা আমার মুখের অবস্থা দেখেই হেসেই দিল।আর বলল গাধা কোথাকার প্রফোজ করতেই জানে না।আর নাকি আমাকে ভালবাসতে এসেছে।
কথাটি শুনে আমি হাফ ছেড়ে বাঁচলাম আর হেসে
ও দিলাম।
আর আমি সেই দিনই বুঝতে পারলাম রাইসা ও আমাকে ভালবাসে।আর সেদিন থেকেই শুরু আমার নতুনত্ব দিয়ে প্রফোজ করার স্টাইল গুলো।
.
যাই হোক রাইসাকে নতুন ভাবে প্রপোজ করার নতুন স্টাইল ভেবে নিয়ে বিকালে ছাদে যাবার জন্য রুম থেকে বের হলাম।ওমা দেখি আংকেল-আংটি আমার মা-বাবার সাথে এক সাথে বসে কথা বলছে।
আর রাইসা ও তাদের সামনে দাড়িয়ে দাড়িয়ে কি যেন বলছিল।আর আমাকে দেখে রাইসা মিটিমিটি হাসছিল।এভাবে হাসার অর্থটা বুঝলাম না।
তাই কিছু না ভেবেই তাদের সামনে গিয়ে সালাম দিলাম
.
-বাবা তুমি এসেছ তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম(আংকেল মানে রাইসার বাবা।আমাকে হঠাৎ বাবা ডাকার মানেটা ও বুঝলাম না)
-ওরা দুইজন রাজি থাকলে শুভ কাজটা তাড়াতাড়ি সেরে ফেলা হোক।কারণ শুভ কাজে দেরি করতে নেই।(মা)
.
ওরা কি বলতে চাচ্ছে আমি ঠীকি বুঝে ফেললাম।মা জোড় করেই আমাদের একটা রুমে পাঠাল।আরে আমিত এটাই চাইছিলাম।
.
-কি নীল সাহেব।আজ থেকে নো রিয়া।
-আমি ত কিছুই বুঝতে পারছি না।(এমন ভাবে কথাটি বললাম যাতে আমি কিছুই জানিনা বা বুঝিনা)
-বুঝতে হবে না।আর হ্যা এবার ঠীক মত প্রফোজ করতে না পারলে কিন্তু বিয়েটা আমি করছি না।
-আমি আর কোন প্রফোজ করতে পারব না।
কারণ আমি যে রিয়া...
(সাথে সাথে ওর হাত দিয়ে আমার মুখটা চেপে ধরল)
-আর যেন রিয়ার নামটা তোমার মুখে না শুনি।
.
আমিত অনেক আগেই থেকে মাকে বলে রেখেছিলাম রাইসাকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করব না।
এবার আর সেই দিনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না।এবার রাইসাকে নিজের করে পাব।এত দিনের জমানো সব ভালবাসা দিয়ে রাইসার জীবন কে রাঙিয়ে দেব।

Comments