ভাগ্যটা এরকম হবে অরিকের কখনো ভাবেনি ৷ সেই মেযেটাই কি ওর সামনে দাড়িয়ে??!! এই তো সেই অনু ৷ আগের চেয়ে আরো বেশি ভাল লাগছে ৷ বেশি সুন্দর লাগছে ৷ বউয়ের সাজে অসাধারণ লাগছে ৷
:
- অনু দাড়াও ৷
- কি?(বিরক্তির স্বরে)
- একটা কথা বলার ছিল ৷
- তারাতারি বলো ৷
- ( একটা কাগজ দিয়ে) ধরো ৷ একটু পড়ে দেখো ৷
_
পড়ার পর সাথে সাথেই অরিকের গালে একটা চড় বসিয়ে দেয় অনু ৷ এরপর যা ইচ্ছা তাই বলে অপমান ৷ অরিক কিছুই বলেনি ৷ চুপ করে সব সহ্য করলো ৷ অনু হনহনিয়ে চলে গেল ৷ অরিক কাঁদছিল তবে তাতে ছিল না কোন শব্দ বা জল ৷ এ কান্না খুব গভীর হয় কিনা!!!
:
অরিকের বাবা মা কেউই ছিল না ৷ ছোটবেলা থেকে এতিমখানায় বড় হয়েছে ৷ তবে আল্লাহ ওকে দিয়েছিলেন অসাধারণ মেধা ৷ কলেজ লাইফে এই ভদ্র শিষ্ট ছেলেটি প্রেমে পরে যায় জুনিয়র এক মেয়ের উপর যার নাম অনু ৷ অরিক জানতো যে মেয়েটির সাথে ওর যায় না ৷ কারন মেয়েটি হাই ক্লাস ফ্যামিলির মেয়ে ৷ তবু যাকে ভালবাসে তার কাছে একবার ভালবাসার কথাটা জানানো তো দরকার! আর সেটাই ছিল অরিকের বড় ভূল ৷ অনু একটা থাপ্পড় আর অনেক বচনে বুঝিয়ে দিলে ওদের আকাশ পাতাল তফাৎ এর ব্যাপারটা ৷ সেদিন রুমে ফিরে অনেক কেঁদেছিল অরিক ৷ তবে আজ ওর সুখের অভাব নেই ৷ কারন সেই মেয়েটা আজ ওর বউ ৷
:
কলেজ শেষ করে অরিক তার অসাধারন মেধার জোরেই বুটেক্সে চান্স পেয়ে গেলো ৷ ইঞ্জিনিয়়ারিং কমপ্লিট করার পর একটা ফরেন বায়িং হাউজ এক প্রকার আমন্ত্রন জানিয়ে চাকরি দিলো ৷ এরই মধ্যে আহমেদ সাহেব যিনি কিনা অনুর বাবা পাত্র খুঁজছিলেন মেয়ের জন্য ৷ আর সামনে পরলো এই অরিকই ৷ কিভাবে পরলো তা বলতে গেলে তো আসল ঘটনাই বলা হবে না!!
:
অনু একটা ছেলেকে ভালবাসতো ৷ ছেলেটির সাথে ওর শারীরিক কিছুও হয়েছিলো ৷ তবে এজ ইউজুয়্যাল বাকি ফ্রডদের মত ওকেও ধোঁকা দিয়ে চলে গেলো ৷ অনু ঠিক করে নেয় বিয়ে করবে না ৷ কিন্তু আহমেদ সাহেব তো আর তার মেয়েকে এভাবে আইবড়ো রাখতে পারেন না ৷ অনেকটা অনুর ইচ্ছার বিরুদ্ধেই বিয়েটা হয়ে যায় ৷
:
অনু বিয়ের আগে দেখেওনি ছেলেটা কে ৷ কারন ওতো বিয়েটা করতেই চায়নি ৷ ছেলেদের উপর বিশ্বাসটা যে চলে গিয়েছে ৷ আর যখন দেখলো ছেলেটা সেই কলেজ লাইফের অরিক তখন মনে মনে উপরওয়ালার সাথে অভিমান দেখালো ৷ তবে দেখতে একটু দেরি হয়ে গিয়েছে ৷ চোখাচোখি হলোই তো বাসর রুমে!!
:
- আপনি!!
- জ্বী মানে, ইয়ে…
- আপনার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে?
- হ্যা ৷
- আপনার কি লাজ লজ্জা একটুও নেই যে আপনি আমাকে বিয়ে করতে আসলেন?? সেদিন বুঝি শিক্ষা হয়নি?
- জ্বী দেখুন সেদিন থাপ্পড় আর অপমানে কষ্ট পেয়েছি কিন্তু ভলবাসা তো চলে যেতে পারে না ৷
- আপনার সিনেম্যাটিক ডায়ালগ কপচানো বন্ধ করেন ৷ সোফায় গিয়ে ঘুমান ৷ আর কালই উকিলের কাছে গিয়ে ডিভোর্সের যাবতীয় কাগজ তৈরি করে ফেলবেন ৷
:
অরিক চুপচাপ চলে যায় ৷ ভাবে হয়তো মেয়েটার মেজাজ খারাপ হয়ে আছে এখন ৷ পরে ঠিক হয়ে যাবে ৷ তবে ওর এই ধারনাটা ছিল অনেক বড় ভূল ৷
:
আহমেদ সাহেবকে অনেকেই বলছেন এক এতিম ছেলের সাথে মেয়েটাকে বিয়ে দিয়ে ভূল করেছেন ৷ তবে অনুর কথা চিন্তা করলে অরিকের চেয়ে ভাল ছেলে পাওয়া সম্ভব না ৷ কি আসে যায় এতিমে? আহমেদ সাহেব শুধু এটা জানতেন যে অনুর সাথে সেই ছেলেটার ব্রেক আপ হয়েছিলো ৷ যদি জানতেন শারীরিক ব্যাপার স্যাপার তাহলে বোধহয় আর অরিকের লাইফটা ধ্বংস করতে চাইতেন না ৷
:
"বাড়ি ফেরার পথে উকিলের সাথে কথা বলবেন ৷"
-
সকালে উঠে অরিক দেখলো বউটা ঘুমাচ্ছে ৷ কাল রাতের লাল বেনারশিতেই ঘুমিয়ে পরেছে ৷ কি যে মিষ্টি লাগছিলো মেয়েটাকে!! চুপটি করে ঘুমিয়ে আছে ৷ বাচ্চারা যেসব জামাই বউ নিয়ে খেলা করে ঠিক সেরকম একটা বউয়ের মত লাগছিলো অনুকে ৷ সকালে কোনরকম ব্রেকফাস্ট বানিয়ে অফিসে ছুটে যাবে তার আগেই অনুর এই কথাটা কানে বাঁধলো ৷
- আপনি কি সিরিয়াস?
- তো? আপনি কি ভেবেছেন যে আপনার সাথে সংসার করবো? কখনো না ৷ আর লিসেন আমার আগে বয়ফ্রেন্ড ছিল এবং তার সাথে আমার ফিজিক্যাল রিলেশনও ছিলো ৷
:
অরিক নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না ৷ কান দুটো থেকে কেমন যেন গরম হাওয়া বের হতে লাগলো ৷ বন্ধু পলকেরও নাকি একমটা হতো ৷ অপ্রত্যাশিত কিছু শুনলে কান থেকে নাকি গরম হাওয়া বের হতো ৷ আজ অরিক ব্যাপারটা উপলদ্ধি করতে পারলো ৷
:
অফিসে আজ কাজে মন দিতে পারছে না অরিক ৷ কি থেকে কি হলো কিছুই বুঝতে পারলো না ৷ কি করা উচিৎ!! অফিস শেষে একটা পার্কে গিযে পুরো ব্যাপারটা এনালাইসিসি করলো ৷ যে মেয়েটাকে এতোটা ভালবেসেছে তার আগে অন্য ছেলের সাথে ফিজিক্যাল রিলেশন ছিল! ডিভোর্স দেয়ার জন্য এইটুকিুই যথেষ্ট ৷ কিন্তু যাকে ভালবাসে তাকে এভাবে কিভাবে ছেড়ে দেয়া যায়! ভার্জিনিটি তো আর সব কিছু না ৷ অরিক সিধান্ত নিয়ে নিলো ৷ আর সারাজীবনে দ্বিতীয়বারের মত আবেগের কাছে লজিক হার মানলো ৷ প্রথমবার হেরেছিলো সেই কলেজ লাইফে ৷
:
কলিংবেল দুবার বাজাতেই অনু এসে দড়জা খুলে দিলো ৷
- কথা বলেছেন উকিলের সাথে?
অরিক কিছু না বলে রুমে চলে গেলো ৷ অরিক আর অনু পাশাপাশি দুটো ভিন্ন রুমে থাকার ব্যাবস্থা করেছে ৷
- কি ব্যাপার! কথা বলছেন না কেন?
- না ৷ কথ হযনি ৷
- কেন?
- আমার ডিভোর্স দেয়ার ইচ্ছা নাই ৷
- মানে! ! ওকে ৷ আপনার নেই তো কি হয়েছে! আমার আছে!!
- তাহলে আপনি গিয়ে কথা বলুন ৷
- তাই করবো ৷
:
অরিক বুঝে উঠতে পারছে না কিভাবে ওর বউটাকে আটকে রাখা যায়! অনেক ভাবলো ৷ কিছুই বুঝতে পারছে না ৷ অনেক ভাবনার পর অরিক একজন কে খুঁজে পেল যিনি ওকে হেল্প করতে পারবেন ৷ কাল অফিস শেষেই যাবে বলে ঠিক করলো ৷
:
- রান্না বান্না তো কিছুই দেখছি না ৷ দুপুরে খেয়েছেন কি?
- দাড়োয়ানকে দিয়ে আনিয়ে নিয়েছি ৷ আপনি কি ভেবেছেন যে আপনার জন্য রান্না করে বসে থাকবো? তাছাড়া আমি রান্না পারিও না ৷
অরিক কথা বাড়ালো না ৷ রান্না করতে লেগে পরলো ৷ একা থাকার কারনে রান্নাটা বেশ ভালোই পারে অরিক ৷ আইটেম মুরগীর মাংশ ,ইলিশ মাছ ভাজা আর ডাল ৷
:
পরদিন অফিস শেষেই অরিক ছুটে যায় আহমেদ সাহেবের কাছে ৷ আহমেদ সাহেবের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে অনু কি কি পছন্দ করে ৷ আহমেদ সাহেব খুবই ফ্রেন্ডলি ৷ অরিক হয়তো জীবনে প্রথম বারের মত দেখছে কোন বাবা তার মেয়েকে পটাতে কোন ছেলেকে বুদ্ধি বাতলে দিচ্ছে!!!
বাড়ি ফেরার পথে একগুচ্ছো রজনীগন্ধা নিলো অরিক ৷ অনুর পছন্দ ৷ সাথে নিলো ক্যাডবেরি ৷ দরজা খুলেই অনু চলে গেলো ৷ দরজা আটকে অনুর পেছন পেছন ওর রুমে গেল ৷ অনু বিছানায় হেলান দিলো ৷
- আপনার জন্য ৷
- পটাতে আসছেন? বেশি চালাকি করবেন না ৷ তাহলে কিন্তু এখনি বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো ৷
অরিক চুপ করে রইলো ৷ ফুলগুলো ফুলদানীতে রেখে চকলেটটা ড্রেসিংটেবিলের উপর রেখে চলে গেলো ৷
:
এভাবেই দিন কাটতে লাগলো ৷ অনু সব গোছাতে লাগলো ৷ ডিভোর্সের কাগজপত্র ৷ নির্দিষ্ট সময় পর ডিভোর্স দিতে পারবে ৷ এক মাস কেটে গেল ৷ অনুর পছন্দের সব কাজ করতো অরিক ৷ অনুর বারন সত্ত্বেও করতো ৷ রান্না হতে শুরু করে সব ৷ অনু ব্যাপারটা আর সহ্য করতে পারলো না ৷ সিধান্ত নিলো বাবার বাড়ি চলে যাবে ৷
অসহ্যের মাত্রাটা ঠিক সেটা নয় ৷ অসহ্যের মাত্রাটা হলো অরিকের ভালোবাসা ৷ এত বেশি ভালবাসা দেখাচ্ছ যে অনু নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছিলো না ৷ হুট করে কবে না জানি ওর ভালবাসায় পা দিয়ে বসে! কিম্তু ও নিজের ইগোর কাছে হার মানবে না ৷ ছেলেটার মধ্যে কোন কমতি নেই ৷ বরঞ্চ অনুর তুলনায় অনেক বেশি ৷ তবুও অনুর মধ্যে একটা ইগো কাজ করে ৷
:
- ব্যাগ গোছাচ্ছেন কেন?
- বাসায় যাচ্ছি ৷
- বেড়াতে যাবেন?
- নাহ! সারাজীবনের জন্য ৷
- মজা করছেন? (হেসে)
- মোটেও না ৷
অরিক দেখলো অনু কোন কিছুই বাদ রাখেনি ৷ সবই লাগেজে পুরে রেখেছে ৷
- প্লিজ যাবেন না ৷
- ঢং করবেন না ৷ আমি যাবোই ৷
- হাতজোড় করে বলছি প্লিজ যাবেন না ৷
অনু কোন কথা না বলে চুপচাপ চলে যেতে লাগলো ৷ যেতে যেতে বলে গেল,
- আমার ফ্যামিলির কারো সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করবেন না ৷ ডিভোর্স পেপার পাঠালে চুপচাপ সই করে দিবেন ৷
অরিক অসহায়ের মত অনুর চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে থাকে ৷
:
বাড়ি ফিরে কাউকে কিছু বুঝতে দেয়নি অনু ৷ বললো বেড়াতে এসেছে ৷ এক সপ্তাহ পর অরিক এসে নিয়ে যাবে ৷
আহমেদ সাহেবের সন্দেহ যে হয়নি তা নয় তবে নিজের মনকে বিশ্বাস করাচ্ছিলো কিছুই হয়নি ৷
চলে যাওয়ার পর অরিক আর অরিক নেই ৷ সারাক্ষন তাকিয়ে থাকে অনুর বিছানাটার দিকে ৷ এখানেই শুয়ে থাকতো মেয়েটা ৷ কোলবালিশটাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো অরিক ৷ বালিশটা তে ওর গন্ধ লেগে আছে ৷ অরিক কেমন যেন পাগলের মত হয়ে গিয়েছে ৷
:
সাতদিন ধরে অফিসে যায়নি অরিক ৷ কম্পানির থেকে ওকে বাদ দেয়ার প্রক্রিয়া করতেও ভয় পাচ্ছে ৷ কারন ওর মত স্টাফ পাওয়া মুশকিল ৷ অরিক এ কদিনে বেশ পাগল পাগল হয়ে গিয়েছে ৷ সাতদিন পরেও অরিক না আসাতে আহমেদ সাহেবের সন্দেহ হলো ৷ নিজেই খোঁজ নিতে গেলেন ৷ অরিকের বিল্ডিংয়ে আসতেই নিচে দাড়োয়ানের সাথে দেখা ৷
- আসসালামু আলাইকুম ছার ৷ অরিক সাব এর লগে দেহা করতে আইছেন?
- হ্যা ৷ কেন?
- চলেন আপনি ৷ অরিক সাব কেমন জানি পাগল পাগল হইয়া গেছে আপামনি যাওয়ার পর থেইকা ৷
- কি!! চলো তো ৷
:
দাড়োয়ান হামিদই চাবি দিয়ে ফ্ল্যাটের দড়জা খুলে দিলো ৷ হামিদ খুবই বিশ্বস্ত ৷ হামিদ খুলে দিলো কারন অরিকের উঠে এসে দড়জা খুলবে সে শক্তিটুকুও নেই ৷ ঘরে ঢুকেই আহমেদ সাহেব দেখলেন পুরো বাড়িটা ওলটপালট হয়ে আছে ৷ অরিকের রুমে গিয়ে দেখলো বিছানায় শুয়ে এক দৃষ্টিতে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে আছে ৷ দেয়ালে অনুর সব ছবিগুলো লাগানো ৷ বিছানার উপর অনুর বালিনগুলো, একটা অব্যবহৃত লিপিস্টিক, একটা টিপের পাতা, আর একটা আধা ব্যাবহৃত সাবান ৷ সবই অনুর ছিলো ৷ এই কয়টা জিনিস রেখে গিয়েছে কেবল অনু ৷ আহমেদ সাহেব আর ধরে রাখতে পারলেন না ৷ কাঁদতে কাঁদতে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলেন ৷ একটা ছেলে ওনার মেয়েকে এতোটা ভালবাসে আর মেয়েটা কিনা এই ছেলেটাকে রেখে চলে এসেছে!!
:
আহমেদ সাহেব বাড়ি ফিরেই অনুকে ডাকলেন ৷
- বলো বাবা ৷
আহমেদ সাহেব কিছু না বলে সজোরে অনুর গালে একটা চড় মেরে বসেন ৷
- তুই আমার মেয়ে তো? এত নিষ্ঠুর হলি কি করে? যে ছেলেটা তোকে এত ভালবাসে তাকে তুই কিভাবে ছেড়ে আসলি?
- আমার ওকে পছন্দ নয় ৷
- একবার গিয়ে ছেলেটাকে দেখে আয় ৷ তারপর যদি তোর মনে হয় ওর সাথে সংসার করতে পারবি না তাহলে আর কিছু বলবো না ৷
:
অনু অনিচ্ছা সত্ত্বেও গেলো ৷ অনু যাবার পরপরই আহমেদ সাহেব ড্রাইভারকে দিয়ে লাগেজ টা পাঠিয়ে দিলো ৷ কারন তিনি জানেন তার মেয়েটা এবার আর ফিরতে পারবে না ৷
:
দাড়োয়ান অনুর হাতে চাবি ধরিয়ে দিলো ৷ অনু অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো হামিদের দিকে ৷ একতলায় গিয়ে ফ্ল্যাটের দড়জা খুলে ভিতরে চলে গেল ৷ পুরো বাড়িটা এলোমেলো ৷ অরিকের রুমে গিয়ে দেখলো চোখ বন্ধ করে গোঙানীর মত অনু অনু করে ডাকছে ৷ চুলগুলো উস্কখুষ্ক ৷ চেহারাটা মলিন ৷ বুকের উপর একটা ডায়রি ৷ দেয়ালে এলোমেলো ভাবে অনুর ছবিগুলো লাগানো ৷ বিছানায় অনুর ব্যবহৃত বালিশগুলো ৷ শেষ হয়ে যাওয়া লিপিস্টিকটা, টিপের পাতাটা ৷ বুকের উপর থেকে ডায়রিটা নিয়ে দেখতে লাগলো অনু ৷ সব পাতা লেখায় ভর্তি ৷ একটা শব্দই লেখা ৷ "অনু" ৷ অনু অবাক চোখে দেখছে আর চোখ বেয়ে জল পরছে ৷ যে ছেলেটা এত ভালবাসে তাকে এভাবে কষ্ট দিচ্ছে অনু!!
অরিকের পাশে বসলো ৷ কপালে হাত দিয়ে দেখলো জরে গা পুরে যাচ্ছে ৷ অরিক চোখ মেলে হালকা ৷ ঝপসা চোখে অনুকে দেখেই ধরফরিয়ে উঠে বসে অরিক ৷ একই কথা বারবার বলতে লাগলো,
- তুমি আর যাবে না তো অনু?
অনু কাঁদছে ৷ উত্তর দিবে কিভাবে! কান্নাই তো থামাতে পারছে না! ! অনেক কষ্টে কান্না থামিয়ে অরিককে জড়িয়ে ধরে ৷
- কোথায় যাবো তোকে ছেড়ে পাগল? কখনো ছেড়ে যাবো না ৷ শুধু এইভাবে পাগলের মতো ভালবেসে যাস ৷
:
হয়তো এটাকেই ভালবাসা বলে ৷ অরিকগুলো বারবার আবেগের কাছে হার মানে ৷ এখানে অরিক ভালবাসাকে জয় দিতে পারলেও অরিকদের ভালবাসাগুলো হার মানে অনুদের ইগো অথবা মাইন্ড গেমের কাছে ৷ ভাল থাকুক অরিকগুলো ভাল থাকুক তাদের আবেগগুলো আর বেঁচে থাকুক ভালবাসাগুলো ৷
Comments
Post a Comment