‪#‎অবয়ের‬ এবং রিমঝিম দুজনে পাশাপাশি ফ্ল্যাটে থাকে। রিমঝিম কলেজে পড়ে আর অবয় প্রাইভেট ফার্মে চাকরি করে। অবয় রিমঝিম সবসময় অনেক কাছাকাছি থাকে সবসময়। রিমঝিম কে অবয়ের পরিবার নিজের মেয়ের মতো ই দেখে। অবয়ের যদি কোনো মেয়েকে ভালো লেগে থাকে তাহলে সে হলো রিমঝিম। রিমঝিম প্রায়ই অবয়দের ফ্ল্যাটে তার বড় আপুর সাথে সময় কাটাতো। কখনো দিনে কখনো রাতে। সেভাবেই অবয় এর সাথে রিমঝিম এর পরিচয়। মাঝে মাঝে অবয়, রিমঝিম আর তার বোনকে নিয়ে ঘুরতে বের হতো, রিমঝিম কে গাড়ি করে কলেজে পৌঁছে দিত, রিমঝিম কে রেস্টুরেন্টে খেতে নিয়ে যেত।মাঝে মাঝে ছাদে বসে তার সাথে সময় কাটাতো। আর রিমঝিম ও অবয়কে মাঝে মাঝে নিজ হাতে রান্না করে খাওয়াতো আরোও কত কি!!!! এসবের পরেও প্রতিরাতে তাদের ফেসবুকে অনেক সময় ধরে চ্যাটিং হতো। এইভাবে একসময় অজান্তেই রিমঝিম অবয় কে ভালোবেসে ফেলে কিন্তু সে কোনোদিন তার মনের কথা অবয়ের কাছে ভাষায় প্রকাশ করে নি। অবয় রিমঝিম কে ভালোবাসে কি না, তা ঠিক বলতে পারছিনা।
- আচ্ছা, আপনি কোনো মেয়েকে ভালোবাসেন? 
- না তো। তুমি কোনো ছেলেকে ভালোবাসো? তোমার মনের মানুষ?
- হুমম বাসি। কিন্তু তাকে কিছুতেই বলতে পারছিনা। খুব ভয় আর লজ্জা লাগে।
- এত লজ্জাবতী হলে তো হবে না!! যাকে ভালোবাসো তাকে তো তোমার ভালোবাসার কথাটা ক্লিয়ার করে বলতে হবে। তারপর তার মতামত পরে নিবে। সমস্যা কোথায়?
- হুমম।তাই তো। আচ্ছা ভেবে দেখি তাহলে?
- হুমম। তোমার ইচ্ছা।
# সেই রাতেই রিমঝিম অবয়ের কথা গুলো ভেবে ভেবে এক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেয় যে আগামীকাল ই সে তার ভালোবাসার কথা অবয় কে বলবে।
* প্রতিদিনের মতোই রিমঝিম অবয়ের গাড়ি করে কলেজে যাওয়ার জন্যে সকাল বেলা তাদের ফ্ল্যাটে যায়। আজ অবয় কে তার সবকিছু বলার কথা। ঘরে প্রবেশ করেই কয়েকজন মেহমান দেখতে পেল সে। অবয়ের বোন অনু,রিমঝিমকে দেখেই..
- এদের কে চিনো রিমঝিম? 
- না। কে ওরা?
- আসলে অবয়ের বিয়ের কথা বার্তা চলছে। ওরা মেয়েপক্ষের লোক।
সঙ্গে সঙ্গে প্রচন্ড আঘাত খেল রিমঝিম। নিজেকে কোনোভাবেই সামলাতে পারছিল না। এই মুহূর্তে সে কি করবে কিছুই বুঝতে পারছেনা........



-শুনলাম আপনি নাকি বিয়ে করছেন?
- আসলে রিমঝিম, আমি এই বিয়ের আগামাথা কিছুই জানি না। আম্মু-আব্বু কই থেকে মেয়ে একটারে পছন্দ করছে।এখন তারেই বিয়ে করতে হবে।
- মেয়ের সাথে কথা হয়েছে?
- হুমম।বৃষ্টি। মেয়েটির নাম। অনেক সুন্দর একটা মেয়ে।
- যাক! অনেকদিন পরে আমাকে ছাড়া আপনার অন্যকোনো মেয়েকে পছন্দ হলো..!!!!
- ইয়ে মানে রিমঝিম.....
- থাক। বিয়ে কবে করছেন?
- জানি না। তবে খুব দ্রুতই। কিন্তু বিয়েটা সম্পুর্ন আমার অমতেই হচ্ছে। আসলে আম্মু আব্বুর অমতে কখনো যাই নি তো। তাই!
- আপনি বিয়েতে রাজি?
- ঠিক বুঝতে পারছি না রাজি হব কি না।
- ....... 
- বলার পরিকল্পনা করেই এসেছিলাম। কিন্তু তার আর সুযোগ হয় নি।
- কেন কি হয়েছে?
- বাদ দিন। আচ্ছা আপনার মনে পড়ে আমাকে নিয়ে আপনি ঘুরতে যেতেন? কত কিছু খাওয়াতেন,। কত কথা বলতাম আমরা... হাত ধরে ধরে হাটতাম..?.মনে পড়ে?
- হ্যাঁ। কিন্তু কেন?
- আমি আজ আপনাকে রান্না করে খাওয়াবো। খাবেন? আমার হাতের রান্না?
- রিমঝিম তোমার হঠাৎ কি হয়েছে?
- না। আর হয়তো এসব দিন ফিরে আসবে না। শুধু কিছু স্মৃতি থেকে যাবে। তাই আর কি এসব বলছি।
- ও। আচ্ছা এসব কথা প্লিজ এভয়েড করো। তোমার মনের মানুষের নাম টা যেন কি?
- অবয়। (অন্যমনষ্ক হয়ে)
- কি?
- না কিছু না।
- কারো একজনের নাম শুনলাম মনে হল?
- আরে না। 
- নাম কি? 
- জানি না।
- রিমঝিম তুমি হয়তো যাকে ভালোবাসো, সে হয়তো তোমাকে অনেক ভালোবাসে। কিন্তু বলতে পারছে না। তুমি ওকে বলে দাও। আমি নিশ্চিত ও তোমাকে অনেক ভালোবাসে।
- আমি আপনাকে ভালোবাসি!
- ভুল শুনলাম?
- একেবারেই ঠিক। সত্যি কথা। অনেক ভালোবাসি।
- পাগলি.. এতদিন কেন বলো নি?
- খুব ভয়ে ছিলাম।
- এখন কি করবো?
- জানি না।
- আম্মু আব্বুকে সব বলে দিই। তারা আমাদের রিলেশন ঠিকই মেনে নেবে।
- যদি মেনে না নেয়?
- আরে,, আম্মু তোমাকে অনেক ভালোবাসে। যদি জানে তুমি আমার বউ হতে চাও নিশ্চয় খুশি হবে।আর আমার আপু তো তোমার জন্যে অস্থির। সে প্রথমেই মেনে নিবে। 
- সত্যিই?
- হ্যাঁ। আজকেই সব ক্লিয়ার করতে হবে। 
- আজকেই?
- হ্যাঁ। আজকেই। চলো আমার সাথে।
- চলুন...

Comments