--তোকে তো আজ দারুন লাগছে মিমি.!!
.
--কোনটা-সালোয়ার কামিজ'টা নাকি চুলগুলো...!!
.
--আরে না..ড্রেস নয়...তোকেই অনেক দারুন লাগছে আজকে...!!
.
--কোনটা দারুন লাগছে.."মোটা ফিগার না মুখ"
.
--পুরোটাই সুন্দর লাগছে...
.
--খুশি করতে চাইছিস.?
.
--নাহ খুশি করবো কেনো..দারুন লাগছে তাই প্রশংসা করলাম...!!
.
--তোকেও অনেক জোশ লাগতেছে...স্কর্ফ টা কই থেকে কিনেছিস.?
.
--বসুন্ধরা থেকে...পছন্দ হয়েছে...কিনবি একটা.? (মেঘলা জানতে চায়)
.
--কিনতে ইচ্ছে করছে...তবে মানাবে না..হাতির মত লাগবে আমাকে..
.
এবার চোখ রক্ত-গরম করে মেঘলা বলে-"আজে বাজে বকিস কেনো.? তোকে কে মোটা বলে.? এমন ফিগার'ই ভালো..আমার মুখটা দেখিস না_কেমন ভেতরে ঠাসা..বুকের হাড্ডি বেড়িয়ে আছে..হাড্ডি মেয়ে আমি-হিপবোন ছাড়া পেছনে তো আর কিছু নেই...তোর মত মোটা হওয়ার স্বাদ জাগে রে...কতো রকমের যে চেষ্টা করতেছি-কোনো লাভ হচ্ছেনা...!!
.
--চুপ (ধমক দেয় মিমি)..কে বলছে তুই হাড্ডি মেয়ে..তুই হচ্ছিস স্লিম মেয়ে..তোর মত ফিগার বানাতে পারলে বিশ্ব জয় করে নিতাম রে...
.
--সর্বনাশ...বইন তুই কখনো এমনটা ভাবিস না..
.
--কেন স্লিম থাকার মজা একা ভোগ করতে চাস.? ঐশ্বরিয়াকে দেখিসনি কেমন হাড্ডিসার দেহ,অথচ কত্তো সুন্দর দেখতে..!!
.
--আরে ধুর..কিসের সাথে কী তুলনা করিস..!!
.
--সত্যি'টা তুলনা করেছি...এজন্য আমি চাই তোর মত পাতলা গড়নের ফিগার বানাতে..এটা এখন আমার জন্য সাধনা হয়ে দাঁড়িয়েছে..মানুষের কথার খোঁচা আর ভালো লাগেনা..
.
--মানুষের কথার খোঁচা কি আমাকে কম খেতে হয়.? উঠতে-বসতে সবাই বলে হাড্ডি মেয়ে..তুই কেন এই হাড্ডি সাজতে চাস.?
.
--আরে হাড্ডিতেই মজা..দেখিস না দলে দলে ছেলেরা তোর প্রেমে পড়ে যায়...আর আমাকে তো আজ পর্যন্ত কেউ অফারই করল না...!!
.
--ওহ...এটাই কি তোর দুঃখ.?
.
--হুম..আরো গোপন দুঃখ তো আছেই..গোপন দুঃখ গুলো গোপনেই ভোগায় নিজেকে..তাড়ানো যায় কি আর সেই দুঃখ.??
.
--ঠিক আছে..আমি তোর জন্য একটা পার্টনার জোগার করে দিবো...
.
--জোগাড় করে কি আর সম্পর্ক হয়.?
.
--আরে হয়..চিকন গড়নের ছেলেরা মোটা গড়নের মেয়েদের বেশি পছন্দ করে..আর মোটা'রা পছন্দ করে চিকন মেয়েদের..দেখিসনা মোটা মোটা ছেলেরাই আমাকে বেশি প্রোপোজাল দেয়..তুই কি মোটা ছেলে চয়েস করবি.?
.
--মাথা খারাপ..নিজের সমস্যায় বাঁচিনা আবার মোটা ছেলে.??
.
--তো...দেখবি পাতলা কোনো ছেলে জুটে যাবে তোর কপালে..
.
--জোটার দরকার নেই রে..ফিগারটা পাতলা করতে পারলেই আনন্দ পাবো..সেই আনন্দটাই পেতে চাই এখন..!!
.
--হুম বুঝলাম এখন চল উঠি অনেক দেরী হয়ে গেছে রে বাসায় ফিরতে হবে...
.
--হুম চল..
.
এরপর মেঘলা একটা অটো ধরে বাসার দিকে রওনা দেয় আর মিমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে খালি রিস্কা খুঁজতে থাকে..একটা রিস্কাও খালি যাচ্ছেনা..প্রতিটা রিস্কায় যাত্রী আছে..অনেকক্ষন পর একটা কিশোর রিস্কাওয়ালা সামনে এসে দাঁড়ায়...!!
.
--এই খালি যাবে.?
.
--কই যাইবেন,আফা.?
.
--যাত্রাবাড়ি-ধলপুরে...
.
--ওডেন আফা..
.
>>রিস্কায় ওঠে বসে মিমি<<
.
--ভাড়া কতো নিবে.?
.
--আফনে খুশি হয়া যা দেন...
.
--ওহ ঠিক আছে...খুশি হয় মিমি..
.
এতো ভালো রিক্সাওয়ালা আজ-কাল পাওয়া যায়না..এ দিক থেকে ছেলেটাকে অনেক ভালো মনে হয়...মনোযোগ বাড়ে ছেলেটার প্রতি; হালকা গায়ের গড়ন তবে বয়সের তুলনায় একটু খাটো ছেলেটি রিক্সার সিটে বসে প্যাডেল করতে পারছিল না..একবার প্যাডেল চেপে ডান পাশে নামছে বাঁ পাশে ওঠে যাচ্ছে..আবার বাঁ পাশে নামছে ডান পাশ ওঠে যাচ্ছে ওপরের দিকে...এই ছন্দময় রিক্সা চালাতে গিয়ে তার শরীর থেকে ঘাম ঝড়ছে..গায়ে শীতের কোনো কাপড় নেই; তেল চিটচিটে একটা শার্ট পড়ে আছে সেটাও ঘামে ভিজে লেপ্টে আছে শারীরের সাথে...মনে প্রশ্ন জাগে শ্রমের কারনে দেহের তাপে শীত তাকে কাবু করতে পারছেনা নাকি শীতের কোনো কাপড়'ই নেই তার...এই বয়সে তার লেখাপড়ার কথা অথচ রিক্সা চালাচ্ছে...মায়া জাগে মিমির মনে...মায়া নিয়ে বলে-
.
--কি নাম তোমার.?
.
--মোঃ নাসির উদ্দিন শিপলু..
.
--তোমার বাড়ি কোথায় শিপলু?
.
--সারিয়াকান্দি,বগুড়া..
.
--ওহ নদী পারের ছেলে তুমি.?
.
--হ আফা..
.
--জোয়ারে কি তোমাদের এলাকা ডুবে যায়নি.?
.
--জোয়ার কি আফা.?
.
--জোয়ার চিনো না.?
.
--না..
.
--জোয়ার মানে হল বন্যা...অতিমাত্রার বৃষ্টির ফলে মাঠ-ঘাট সব পানিতে প্লাবিত হওয়া বুঝায়...
.
--ওহ...বানের জলের কথা কইতাছেন আফা.? হ বানে তো আমাগো ঘরবাড়ি সব ভাইসা নিয়া গেছে..
.
--হুম বন্যার কথা বলছি..তা তোমার বাসায় কে কে আছে.?
.
--মা ছাড়া কেউ নাই আফা; সবাই বানের জলে ভাইসা গেছে..আব্বা আর ভাইজান ভাইসা গেছে ঢলে,,ছোট বোনডারেও খুঁইজ্জা পাইনাই..
.
কথাগুলো শুনে মায়া আরো বেড়ে যায়; পাতলা গড়নের শিপলুর ফিগারটাও ভালো..দরিদ্র হলেও কৈশরের দুরন্ত গতি আছে দেহে..সঙ্গে সঙ্গে নিজের দিকে নজর যায়-মোটা শরীরটার কারনে মনে সুখ নেই..আর শিপলুর মনে দুঃখ আছে; তবুও সুখী মনে হয় তাকে..শরীর নিয়ে অন্তত্য কোনো দুঃখ নেই ছেলেটির..রিক্সা দয়াগন্জ ব্রিজ ক্রস করছে, মনে হচ্ছে টানতে পারছেনা শিপলু এজন্য রিক্সা একদিকে কাত হয়ে যাচ্ছে..এজন্য মিমি জিঙ্গেস করে-
.
--শিপলু তোমার কি রিস্কা টানতে অসুবিধা হচ্ছে.?
.
--হু.. কিনারথুন এড্ডু মাজে বইবেন আফা.?
.
--কেন...মাঝে বসবো কেন.?
.
--আফনার শইলটা ভার তো; রিক্সা কাত হইবার চায়...
.
--কি আমি ভারী.? এই দাঁড়াও দাঁড়াও (ক্ষেপে যায় মিমি)
.
ভয় পেয়ে ব্রিজের এক কোনায় রিক্সা দাড় করায় শিপলু..এক লাফে রিক্সা থেকে নেমে আসে মিমি...নেমেই বলে-
.
--বেয়াদপ ছেলে..এক চড়ে সব দাঁত ফেলে দিব...
.
অসহায় চোখে তাকিয়ে থাকে শিপলু..হনহন করে সায়দাবাদের দিকে এগিয়ে যায় মিমি..আরেকটা রিক্সায় ওঠে শিপলুর ভাড়াটা না দিয়েই উধাও হয়ে যায় মিমি..!
----
ঘর্মাক্ত শিপলু ছুটে যাওয়া রিক্সার দিকে করুন চোখে তাকিয়ে থাকে...প্রায় চলে এসেছে যাত্রাবাড়ির কাছে অথচ ভাড়া পেল না...আচমকা ঝড় এসেছে; শিপলুর মন বলে এটাকেই বুঝি জোয়ার বলে..হঠাৎ হানা দিয়ে ঘরবাড়ি সব ভাসিয়ে নিয়ে যায়..ভাড়া না পাওয়ার মধ্যে আনন্দ নাই; আছে কষ্ট আছে হতাশা..কষ্ট নিয়ে রিক্সা টেনে এগিয়ে যায় গেন্ডারিয়ার দিকে...!!
.
যাত্রাবাড়ি চৌরাস্তা যাওয়ার সাথে সাথে হঠাৎ বুকটা কেঁপে ওঠে মিমির...এমন অবিচার করে ফেলল রাগের বশে.! এতই খারাপ সে.! ভাড়া পর্যন্ত দিল না জোয়ারে ভাসা ছেলেটাকে..নিজের মস্তিস্কে জেগে ওঠা ঝড় সামাল দিতে পারেনি মিমি..নরম হয়ে নতুন রিক্সাওয়ালাকে বলে-
.
--রিক্সাওয়ালা ভাই, ভুল হয়ে গেছে..আগের রিক্সার ভাড়া দেওয়া হয়নি..একটু ব্রিজের কাছে যাবেন; চলুন না..আপনাকে ভাড়া বাড়িয়ে দিব..!!
.
রিক্সাটি ব্রিজের কাছে ফিরে আসে..হাহাকার করে ওঠে মিমির মন..শিপলুর রিক্সা নেই,কোথায় গেল সে; এখন কোথায় খুঁজবো.?
.
--ভাই একটু খুঁজে দেখবেন রিক্সাওয়ালা সেই কিশোর ছেলেটাকে.?
.
--কই পামু আফা; মনে অয় সোজা রাস্তা ধইরা রাইসা-বাজার চইল্যা গেছে...
.
--তাহলে একটু ওদিকেই যান না...
.
পুরো বাজার তন্ন-তন্ন করে খুঁজেও শিপলুকে পাওয়া গেলনা..কোথাও নেই সে; কিভাবে এখন খুঁজবো তাকে..রেগে গিয়ে শিপলুকে চড় মারতে চেয়েছিল; চড়টা মারতে পারেনি মিমি.. কিন্তুু শিপলুই "করুন কথার চড় মেরে গেছে তার মুখে...মোটা ফিগার নিয়ে মনে যাতনা থাকে সব সময়..এখন সেটা নেই; চাপা পড়ে গেছে নিজের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবাহারের তলে...এত পাষান সে.! হঠাৎ মনে হয় নাহ আজ থেকে আর কলেজে রিস্কায় যাব না..ভাড়াটা মিটিয়ে উদাস মনে হাঁটতে থাকে মিমি..মনটা ভীষন খারাপ হয়ে গেছে..শিপলুকে ভাড়া না দিয়ে কষ্ট দেওয়ার জন্য প্রতিদিন হেঁটে কলেজ করাকেই শাস্তি হিসেবে ঠিক করে নেয় মিমি..!!
.
-----
প্রায় একমাস পরের ঘটনা; প্রতিদিন কলেজে হেঁটে যাওয়ার ফলে একদম অন্যরকম হয়ে গেছে মিমি..ওজন ১০ কেজি কমেছে..মুটি মেয়ে বলে কেউ আর টিজ করতে পারেনা..আস্তে আস্তে চিকন হয়ে যাচ্ছে সে..শিপলুকে কষ্ট দেওয়ার বিনিময়ে তার শাস্তিটা অনেক ভালো একটা প্রভাব সৃষ্টি করে শরীরে..এই সাজা তাকে উপহার হিসেবে টেনে নিচ্ছে স্লিম হওয়ার পথে..আজ সেমিস্টার পরীক্ষা; তারপরে আবার দেরি হয়ে গেছে বাসা থেকে বের হতে তাই রিক্সায় যেতে হবে কলেজে...বাসা থেকে বেরিয়ে'ই দেখে একটা খালি রিক্সা দাঁড়িয়ে..অনুমতি না নিয়ে বলে-
.
--ইডেন কলেজ চলেন দ্রুত; ভাড়া বাড়িয়ে দেব..
.
রিক্সা চলতে শুরু করে..পরীক্ষার ভাবনায় কিছুটা অন্যমনস্ক ছিল মিমি..হঠাৎ ভাবনা থেমে যায়; আচমকা চোখ যায় রিক্সার গতির দিকে..দুরন্ত গতিতে রিক্সা ছুটে চলছে,রিক্সা চালকের মুখ দেখা হয়না কখনো..পিঠ দেখা হয় সব সময়..চালনার ভঙ্গি দেখে চমকে যায় মিমি; সিটে না বসে রডের ওপর থেকে ছন্দময় তালে চালিয়ে যাচ্ছে রিক্সাচালক..মিমি প্রায় চিৎকার করে বলে-
.
--এই.! তুমি শিপলু না.?
.
--হ আফা শিপলু..জোয়ারে ভাসা শিপলু; আমারে চিনছেন.?
.
>>আনন্দে বুক ফেটে যেতে চাইছে মিমির..নিজেকে সামলে নিয়ে বলে-
.
--তুমি আমাকে এভাবে সাজা দিলে কেনো.?
.
--আফা..আফনি তো আমারে বকা দিছিলেন..
.
--হ্যাঁ..তোমাকে বকা দেওয়াটাই হচ্ছে আমার যন্ত্রনা; আমার কষ্ট,,তোমাকে বকা দিয়ে আমি আর কখনো রিক্সায় চড়িনি..জানো.??
.
--হ' জানি আফা...প্রায়'ই খাড়ায়া থাকতাম আপনাদের বাসার সামনে..কলেজের টাইম হইলে হাইডা যাইতেন আফনে..আমার মুখ তো দেহেন নি..হের লাইগা চিনতেও পারেন নাই; আজ রিক্সায় উইড্ডা চিনছেন..
.
--হ্যাঁ..তোমার রিক্সা চালানোর ঢংটা খুব সুন্দর..আমার চোখে গেথে ছিল এটি; এজন্যই চিনে ফেলেছি..
.
--আফা একটা কথা বলমু.?
.
--হুম বলো.?
.
--আফনে অনেক শুকায়া গেছেন; আগের থিকা অহন অনেক সুন্দর হইছেন আফা..
.
কথাটি শুনে জুড়িয়ে যায় মিমির মন..হাসিমুখে বলে এটা আমার কর্মফলের উপহার..এই কথাটির অর্থ বুঝতে পারেনা শিপলু...কলেজের সামনে এসে মিমি বলে-
.
-এই নাও ১০০ টাকা; এটা তোমার জন্য..আর শোনো-বসে থাকবে তুমি..পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর আমাকে বাসায় নিয়ে যাবে..তোমাকে আজ নিজের হাতে রান্না করে খাওয়াবো...আব্বুকে বলে তোমার একটা চাকরীর ব্যবস্থা করব..আব্বুকে বলেছি আমি তোমার কথা..!!
.
>>অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে শিপলু<<
.
টাকা দিয়ে; কথা শেষ করে..অনেকটা উড়ে কলেজের ভেতর যায় মিমি..নিজের মধ্যে নিজেকে খুঁজে পায়না সে..মনে হচ্ছে চিকন একটা পরী উড়ে যাচ্ছে...দূর থেকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে মেঘলা; মনে মনে বলে-
.
--ইস্.! যদি মিমির মতো সুন্দর হতে পারতাম...বুকে হাহাকার জেগে ওঠে..হাহাকার নিয়ে ডাকে-মিমি.!
.
মিমি মাথা ঘুরিয়ে দেখে মেঘলাকে; ওর দিকে এগিয়ে গিয়ে বলে-
.
--কী রে.! কিছু বলবি.?
.
--তোর মতো পরী হতে ইচ্ছে হচ্ছে..এতো সুন্দর হলি কীভাবে.? মনে হচ্ছে ডানাকাটা পরী উড়ে এসেছে আমাদের ক্যাম্পাসে.!
.
>>বিজয়ের হাসি ভেসে ওঠে মিমির ঠোঁটে; উওর না দিয়ে বান্ধবীর হাত ধরে হাসিমুখে ছুটে যায় কলেজের দিকে...!!
.
#উৎসর্গ ও অনুপ্রেরনা- সাদা মনের মোটা শরীরের সমস্ত হতাশাগ্রস্থ মানুষকে...আপনি মোটা বলে আপনাকে কেউ পছন্দ করেনা এমনটা ভেবে মন খারাপ করবেন না...কারন আপনার মাঝে এমন কিছু গুন আছে যা একজন_স্লিম ফিগারের মানুষের মাঝে নেই...তাই সর্বদা ভালো থাকুন; দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুন।
Comments
Post a Comment