-ড.মুহাম্মদ রেজাউল করিম
(পূর্ব প্রকাশের পর)
পৃথিবীতে বিশ্বাসীরাই সুখে আছে। বিশ্বাসের কোন ক্ষয় নেই। বিশ্বাস অসীম। যার বিশ্বাসের গভীরতা যত সে তত সুখী এবং সফল। আল্লাহ তায়ালা গোটা দুনিয়াকে শুধু মাত্র সুখ-শান্তি দিয়েই ভরে দেননি। বরং দু:খ-কষ্ট,বিপদ-মুসিবত,অভাব-অনটন, বিরহ-বেদনা ইত্যাদি মানুষের গোটা জীবনকে জালের মত জড়িয়ে রেখেছে। মানুষ এগুলো থেকে নিজেকে কখনো আলাদা রাখতে পারে না। অথবা এগুলো থেকে আলাদা হয়ে জীবন যাপন করা একেবারেই যেন অসম্ভব। এগুলো থেকে মুক্ত থাকলে সেটিকে মানব জীবনও বলা যায় না। আর ইসলাম বৈরাগ্য বা নি:সঈ জীবনও সমর্থন করে না। তাই মানুষকে এসব নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে।
(পূর্ব প্রকাশের পর)
পৃথিবীতে বিশ্বাসীরাই সুখে আছে। বিশ্বাসের কোন ক্ষয় নেই। বিশ্বাস অসীম। যার বিশ্বাসের গভীরতা যত সে তত সুখী এবং সফল। আল্লাহ তায়ালা গোটা দুনিয়াকে শুধু মাত্র সুখ-শান্তি দিয়েই ভরে দেননি। বরং দু:খ-কষ্ট,বিপদ-মুসিবত,অভাব-অনটন, বিরহ-বেদনা ইত্যাদি মানুষের গোটা জীবনকে জালের মত জড়িয়ে রেখেছে। মানুষ এগুলো থেকে নিজেকে কখনো আলাদা রাখতে পারে না। অথবা এগুলো থেকে আলাদা হয়ে জীবন যাপন করা একেবারেই যেন অসম্ভব। এগুলো থেকে মুক্ত থাকলে সেটিকে মানব জীবনও বলা যায় না। আর ইসলাম বৈরাগ্য বা নি:সঈ জীবনও সমর্থন করে না। তাই মানুষকে এসব নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে।
কিন্তু মানুষ সব সময় ভালো কামনা করে কিন্তু অ-শুভ, অকল্যান এমনিতেই চলে আসে। মানুষ সর্বদা সুখই পেতে চায় কিন্তু কখনো কখনো বিপদ-মুসিবত বেদনাকেও আলিঈন করতে হয়। এ জন্য বলা হয় –”অশান্তি যুদ্ধ হতেও গুরুতর” ”প্রচুর ধনসম্পত্তির ভিতর সুখ নাই,মনের সুখই প্রকৃত সুখ”। যার মনে সুখ আছে সে আসল সুখী। কারণ মন থেকে মানব। যার মনে সুখ আছে সেই আসল ধনী। কারণ মানুষের মন সব কিছুকে ধারণ করতে পারে। কিন্তু সব মানুষের মন আবার একই রকমও নয়। সেটিও মানুষ ভেদে আলাদা আলাদা। জরাসন্ধ বলেছেন-”যে মানুষের বৃত্ত যত বেশি বিস্তৃত, সে তত বেশি দুখি। আশ্চর্য এই যে, সেকথা জেনেও মানুষ তার গ-ির রেখা দূর থেকে দূরান্তরে টেনে নিয়ে চলছে”।
আজকের আধুনিক বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তির উন্নতির যুগে মানুষের মনের উপমা এটি আরোও বেশী পরিস্কার করে দিয়েছে। যেমন ধরুন একটি ছোট সিডি, অথবা মেমরি কার্ডে অনেক জিনিষ সংরক্ষন করা যায়। ঠিক তেমনি একটি মনের মধ্যেও অনেক জিনিষকে ধারণ করা সম্ভব। গোটা মানবতাকে স্থান দেয়া যায়। যদিও লোকটি হোক না নি;শ্ব। প্রথম কাজটির জন্য অর্থেও প্রয়োজন আর দ্বিতীয়টির জন্য প্রয়োজন আপনার চিন্তা এবং মাখলুখের প্রতি ভালবাসা। এজন্য ওমর রা: বলেছেন-” ফোরাতের তীওে একটি প্রানীও যদি না খেয়ে মারা যায় তাহলে শাসককে জবাবদীহি করতে হবে। আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (স:) নবুয়তী জীবনের পূর্বে একজন মানুষ হিসেবে মানব প্রেমের চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে গঠন করেছিলেন ‘হিলফুল ফুজুল’ নামক সংগঠন। মানবতার মুক্তির জন্য চিন্তায় নিমগ্ন হয়ে ধ্যানে কাটিয়েছেন হেরা গুহায়। তিনি মানুষের নফসের পরিশুদ্ধতার উপরেই সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, “মানুষের নফসের ও সেই সত্তার কসম যিনি তাকে ঠিকভাবে গঠন করেছেন। তারপর তার পাপ ও তার তাকওয়া তার প্রতি ইলহাম করেছেন। নি:সন্দেহে সফল হয়ে গেছে সেই ব্যক্তির নফসকে পরিশুদ্ধ করেছে।” (সূরা আশ শামস, আয়াত: ৭-৯)
সুতরাং একটি পরিশুদ্ধ মনই কেবল বিশ্বাসকে ধারণ করতে পারে। ১৯২৭ সালের মার্চ মাসের ৬ তারিখে লন্ডনে বাটেরেসা টাউন হলে এক অনুষ্ঠানে বার্ট্রান্ড রাসেল বলেন-”আমি কেবল মনে করি, নিজেকে একজন খ্রীষ্টান বলে মনে করার অধিকার পেতে গেলে আপনাকে অবশ্যই সেই নির্দিষ্ট পরিমাণ বিশ্বাসের অধিকারী হতে হবে, যে বিশ্বাসের দ্বারা আপনি নিজেকে একজন খ্রিষ্টান বলতে পারবেন। অর্থাৎ আপনাকে অবশ্যই ঈশ্বর ও তার অমরত্বের উপর বিশ্বাসপরায়ণ হতে হবে। যদি এ দুটি বিষয়ে আপনি বিশ্বাসী না হন, তবে আমার মনে হয় না যে আপনি নিজেকে একজন যথার্থ ঈশ্বরবিশ্বাসী বলতে পারেন”। পৃথিবীতে সব ধর্মই বিশ্বাসের উপর গুরুত্বারোপ করেছে। তাহলে ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসীদের মৌলবাদী, গোঁড়া, সেকেলে বলার কতটুকু যৌক্তিকতা থাকতে পারে? যদি ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসীদেও মৌলবাদী বলা যায় তাহলে অন্য ধর্ম বিশ্বাসীদের কেন বলা যাবে না? আল্লাহ আছেন এই দৃঢ় বিশ্বাসের কারণে আস্তিক যদি মৌলবাদী হন, তাহলে আল্লাহ নেই এই দৃঢ় বিশ্বাসের কারনে নাস্তিককে কেন মৌলবাদী বলা যাবে না?
চলবে---------
Comments
Post a Comment