কালজয়ী পর্ব-১ম

-ড.মুহাম্মদ রেজাউল করিম
গোটা সৃষ্টির মধ্যে ছোট্ট একটি গ্রহের নাম পৃথিবী। যার আনুমানিক বয়স ধরা হয় ৪৫ মিলিয়ন আর আয়তন প্রায় ৫১,০১০,০৫০০ বর্গ কি.মি। এখানেই আমাদের বসবাস। এই গ্রহকে বাস উপযোগী শান্তিময় করে গড়ার দায়িত্ব আল্লাহ তায়ালা মানুষকে দিয়েছেন। যে দায়িত্ব অন্যকোন প্রাণীকে দেয়া হয়নি। এই দুনিয়ায় মানুষকে বানিয়েছেন তাঁর প্রতিনিধি। মানুষের জন্য জ্ঞান অর্জনকে ঈমানের পূর্ব শর্ত বানিয়ে দিয়েছেন। প্রথম আয়াত নাযিল করলেন ”ইকরা”পড়। আল্লাহ বলেন, “ইন্নি জায়ীলুন ফিল আরদি খালিফা”(২:৩০) "I am going to appoint a vicegerent on the Earth." অর্থাৎ “আমি পৃথিবীতে খলীফা প্রতিনিধি নিযুক্ত করতে চাই৷” পৃথিবীর ইতিহাস সাক্ষী বান্দাহ যতদিন যতক্ষন পর্যন্ত প্রতিনিধিত্বের দায়িত্ব প্রভূর নির্দেশ মত ও নির্ধারিত পন্থায় পালন করেছে ততদিন তাঁরা দুনিয়ায় শ্রেষ্ঠত্বের আসনেই সমাসিন ছিল। কিন্তু যখনি মানুষ দায়িত্ব পালনে ব্যার্থ হয়েছে তখনি শুরু হয়েছে অশান্তি! নেমে আসে অমানিশার ঘোর অন্ধকার।
আজকের পৃথিবীতে কোথাও যেন শান্তি নেই! চারিদিকে শুধু মারা-মারি, কাটা-কাটি, হানাহানি,হিংসা-বিদ্বেষ,অন্যায়-অত্যাচার,জুলুম-নির্যাতন,অভাব-অনটন,সবদিকে হাহাকার! আর চিৎকার! চতুর্দিকে যেন অশান্তির দাবানল দাউদাউ করে জ্বলছে। মানুষের মনের ছোট কুঠুরিতেও যেন শান্তি নেই। মানুষের মুখেই শুধু যত চমৎপদ শ্লোগান "Change we can believe in" দিন বদল” ”বদলে দাও বদলে যাও” ইত্যাদি। কিন্তু কোন শ্লোগানই যেন কাজে আসছে না! অনেকে আদর-যত্ন আর ভালোবাসার চাদরে সুখ-শান্তিকে আবৃত করতে কম কসরত করছে না। মনের প্রশান্তির জন্য নানা রকম ধ্যান, মেডিটেশান, যোগ ব্যায়াম, ধবধবে সাদা কাপড় পরিধাণের উদ্দ্যেগও আমাদের মনের কালিমাকে মুক্ত করতে পারছে না। প্রতিমূহুর্তে ব্যর্থতা ও হতাশার গ্লানি মানুষকে দগ্ধ ও উন্মাদ করে তুলেছে। মানুষ প্রকাশ্যে বন্যপ্রানী থেকেও আরো নিকৃষ্ট কর্মকান্ড করছে। অশান্ত, বিভ্রান্ত, হতাশ, বিষন্ন, ভগ্নমনোরথ, ভগ্নহৃদয়, রোষানলে দগ্ধ, মানসিক যাতনায় মানুষ এখন কাতরাচ্ছে! বিশ্বব্যাপী। তাহলে কি মানুষ আশরাফুল মাখলুকাতের মর্যাদা হারাতে চলছে!
পৃথিবীর সাড়ে ৭’শ কোটি মানুষ শান্তি নামক সোনার হরিণকে হন্য হয়ে খুঁজছে। সব জ্ঞানী-গুনী মহারথীরা মিলে জাতিসংঘ, ওআইসি, ন্যাটো থেকে শুরু করে সব সংস্থার এবং প্রতিষ্ঠান চেষ্টা করেও শান্তি নামক সোনার হরিণকে বসে আনতে পারছে না কেন? শান্তি কেন যেন ধরা দেয় না! সে খুব অভিমানী! সে আর কোনদিন মানুষের মাঝে ফিরে আসবেনা? সে মাঝে-মাঝে পৃথিবীর কোন এক প্রান্তে ধরা দেয়। আবার পালিয়ে যায়। বিজ্ঞানের নতুন-নতুন অবিস্কার, তথ্য-প্রযুক্তির চোখ ধাঁধালো বিষ্ময়কর উন্নতি হছেচ। অগ্রগতি বয়ে আনতে পারছে না আমাদের জীবনের। তাই প্রতিনিয়ত আমাদের জীবন হয়ে উঠছে অ-শান্ত, অ-নিরাপদ, অ-কৃতকার্য! প্রতিমূহূর্তে আমরা যেন কোন এক অজানা ধ্বংসের দিকে ছুটছি দূর্বার গতিতে! তাহলে ”অ” নামক অক্ষর টিই কি অশান্তির আসল কারণ!। হয়তোবা তাই! কারণ আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন আর প্রকৃত মানুষ হওয়ার যেই প্রেসক্রিপশান দিয়েছেন তা না মানার কারণেই মানুষ হয়ে গেছে অ-মানুষ।
এরই মাঝে তাঁর কৃতজ্ঞ বান্দারা ফরিয়াদ করছে- ‘‘হে আমাদের রব! যখন তুমি আমাদের সোজা পথে চালিয়েছো তখন আর আমাদের অন্তরকে বক্রতায় আচ্ছন্ন করে দিয়ো না, তোমার দান ভাণ্ডার থেকে আমাদের জন্য রহমত দান করো কেননা তুমিই আসল দাতা৷ [Who say], "Our Lord, let not our hearts deviate after You have guided us and grant us from Yourself mercy. Indeed, You are the Bestower.
পৃথিবী ও আকাশ মন্ডলে যা-ই আছে সবাই তাঁর কাছে নিজের প্রয়োজন প্রার্থনা করছে। প্রতি মুহুর্তে তিনি নতুন নতুন কর্মকান্ডে ব্যস্ত। (৫৫ ঃ ২৯)
When all plans end in failure, all hope is lost, and the path becomes constricted, `O Allah,’ is called out.
When the earth, vast and wide though it is, is straitened for you, causing your soul to feel constricted, call out, `O Allah!’
To Allah ascend all good words, the sincere supplication, the tears of the innocent, and the invocations of the afflicted. Hands and eyes are extended to Him in times of hardship and misfortune. The tongue chants, cries out, and mentions His name. The heart finds peace, the soul finds rest, the nerves are relaxed, and the intellect is awakened--- these are all achieved when we remember Allah, Subhanahu wa Ta’ala-- `How perfect He is, the Exalted.’
অ-শান্তির দাবানলে পৃথিবী কি তাহলে ধবংস হয়ে যাবে!। না! না তা হতে পারে না।
(চলবে....)

Comments